হাইব্রিড গাড়ির জন্য সেরা মেইনটেন্যান্স টিপস
আজকের দিনে হাইব্রিড গাড়ি শুধু ফুয়েল সাশ্রয়ই করে না, বরং পরিবেশবান্ধবও। এটি একসাথে ইঞ্জিন ও ইলেকট্রিক মোটর চালিয়ে স্মার্টভাবে এনার্জি ব্যবহার করে। কিন্তু এই স্মার্ট সিস্টেম ঠিক রাখতে হলে যত্নও হতে হবে স্মার্টভাবে। নিয়মিত মেইনটেন্যান্স না করলে হঠাৎ ড্যাশবোর্ডের সতর্কীকরণ সংকেত (Dashboard warning signal) বা ফুয়েল ইকোনমি কমে যাওয়া শুরু হতে পারে। সঠিক মেইনটেন্যান্স করলে গাড়ির পারফরম্যান্স অনেকদিন ভালো থাকবে এবং ব্যাটারি বা ইঞ্জিনে অযথা খরচ এড়ানো যাবে।
হাইব্রিড ব্যাটারি চেক করুন (Hybrid battery Check)
হাইব্রিড গাড়ির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো হাই-ভোল্টেজ ব্যাটারি। এর ভেতরে থাকা হাই-ভোল্টেজ বিদ্যুৎ/তড়িৎ গাড়ির অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। গাড়ির ইলেকট্রিক মোটরকে সচল রাখতে এবং জ্বালানি সাশ্রয় করতে এই ব্যাটারির মূল ভূমিকা পালোন করে।
কেন গুরুত্বপূর্ণ:
ব্যাটারির হেল্থ ভালো না থাকলে গাড়ি ঠিকমত চলবে না, ফুয়েল এফিশিয়েন্সি ( Fuel Efficiency ) কমে যাবে। পর্যাপ্ত সময় EV তে অর্থাৎ ব্যাটারিতে থাকবে না। ড্যাশবোর্ডে সতর্কীকরণ সংকেত⚠️ (Dashboard warning signal ⚠️) দেখাবে। পর্যাপ্ত সময় EV তে অর্থাৎ ব্যাটারিতে থাকবে না। গাড়ি স্টার্ট নিবে না।
করার নিয়ম:
- ৬ মাস বা ৮ মাসে একবার ব্যাটারি হেল্থ টেস্ট করা।
- স্ক্যানার ব্যবহার করে সেল ভোল্টেজ, মডিউল ব্যালেন্স এবং টেম্পারেচার চেক করা।
- Battery Cooling Fan and Filter পরিষ্কার করা।
- Battery Copper Sheets পরিষ্কার করা।
- গাড়ির ভিতর পরিষ্কার রাখা।
- A/C চালিয়ে গাড়ি চালাতে হবে।
- হাইব্রিড গাড়ি দীর্ঘদিন বন্ধ রাখা যাবে না। সাপ্তাহে অন্তত ১ বা ২ দিন ১৫-২০ মিনিট স্টার্ট করে রাখতে হবে ( সম্ভব হলে চালাতে হবে )।
- কম Acceleration করে, EV কে পর্যাপ্ত ব্যবহার করতে হবে।
- পানি হতে সাবধানে থাকতে হবে❌।
বিশেষ বার্তা:
একটি হাইব্রিড ব্যাটারি লাইফ দেয়া হয় ১০ বছর। সঠিক উপায়ে উপরক্ত Maintenence দ্বারা হাইব্রিড ব্যাটারি আরও কিছুদিন ভালো চলতে পারে। তাই রিকনডিশন গাড়ি নেয়ার সময় কম মাইলেজের গাড়ি এবং আপডেট মডেল নেয়ার চেষ্টা করতে হবে।
ইঞ্জিন জেনারেল সার্ভিস (Engine General Service)
হাইব্রিড গাড়ির ইঞ্জিন হলো গাড়ির দ্বিতীয় হৃদপিণ্ড। যদিও হাইব্রিড গাড়িতে ইলেকট্রিক মোটর থাকে, তবে ইঞ্জিনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু গাড়িকে শক্তি দেয় না, ব্যাটারিকেও চার্জ করে। ইঞ্জিন ও ইলেকট্রিক মোটরের সঠিক সমন্বয়ে গাড়ি ভালো ফুয়েল এফিশিয়েন্সি দেয় এবং মসৃণভাবে চলে।
কেন গুরুত্বপূর্ণ:
হাইব্রিড গাড়ির ইঞ্জিন ভালো না থাকলে ফুয়েল খরচ বেড়ে যাবে। ইঞ্জিণের ভেতর ময়লা বা গাঁথ তৈরি করবে যা ইঞ্জিণের দক্ষতা ও দীর্ঘস্থায়িত্ব কমিয়ে দিবে। ড্যাশবোর্ডে ইঞ্জিন মালফাংশন বা সতর্কীকরণ সংকেত⚠️ (Engine Malfunction or Dashboard warning signal ⚠️) দেখাবে । Exhaust দিয়ে কালো বা সাদা ধুয়া বের হবে।
করার নিয়ম:
- প্রতি ৪০০০ – ৫০০০ কিলোমিটার পরপর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করতে হবে।
- হাইব্রিড গাড়ির জন্য লো-ভিসকসিটি সিনথেটিক অয়েল ব্যবহার করুন।
- ইঞ্জিন অয়েলের সাথে অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করতে হবে।
- প্রয়োজন অনুসারে এসি এবং এয়ার ফিল্টার পরিবর্তন করতে হবে।
- সাবধানে সুন্দর করে গাড়ির বাহির এবং ভেতর থেকে পরিষ্কার করতে হবে।
- গাড়ির ইলেক্ট্রিক্যাল অংশ সাবধানে হালকা করে পানি দিয়ে ধুয়ে দ্রুত বাতাস করে পরিষ্কার রাখতে হবে।
বিশেষ বার্তা:
হাইব্রিড গাড়ির ইঞ্জিন প্রায়ই স্টপ-স্টার্ট হয়, যা অয়েলের কার্যকারিতা দ্রুত কমিয়ে দেয়। সেজন্য লো-ভিসকসিটি সিনথেটিক অয়েল সবচেয়ে ভালো। কম মাইলেজের গাড়ির জন্য 0W-16 বা 0W-20 full synthetic oil এবং বেশি মাইলেজের গাড়ির জন্য 5W-30 full synthetic oil ব্যবহারের পরামর্শ রইল (গাড়ি বা ইঞ্জিণের অবস্থা অনুযায়ী তা পরিবর্তন হতে পারে)।
ব্রেকিং সিস্টেম (Braking System)
হাইব্রিড গাড়ির ব্রেকিং সিস্টেম সাধারণ গাড়ির থেকে ভিন্ন। এর রিজেনারেটিভ ব্রেকিং সিস্টেম শক্তি পুনরুদ্ধার করে এবং ব্যাটারিকে চার্জ করে, যা ব্রেক প্যাড ও ডিস্কে ক্ষয় অনেক কমায় অথবা ব্রেক প্যাডগুলো দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকার কারণে অনেক সময় জ্যাম হয়ে যেতে পারে। তাই একজন দক্ষ টেকনিশিয়ান দিয়ে ব্রেক সিস্টেম সার্ভিস করিয়ে নেওয়া জরুরি।



