হাইব্রিড গাড়ির মেইন্টেইনেন্স ও উপযোগিতাঃ

হাইব্রিড গাড়ির মেইন্টেইনেন্স ও উপযোগিতাঃ

অনেকেই মনে করেন হাইব্রিড গাড়ির মেইন্টেইনেন্স বেশি, যেকোনো সময় ব্যাটারি নষ্ট হলে বাড়তি খরচ, আমাদের দেশে হাইব্রিড গাড়ি উপযোগি নয়। প্রকৃতপক্ষে হাইব্রিড গাড়ির রেগুলার মেইনটেইনেন্স উল্টো কম, কেননা একদিকে যেমন হাইব্রিড সিস্টেমের জন্য আলাদা কোনো রেগুলার মেইন্টেইনেন্স লাগে না, অন্যদিকে হাইব্রিড গাড়ি সারাক্ষণ ইঞ্জিনে চলে না বলে ইঞ্জিনের কম্পোনেন্টস গুলোর লঞ্জিভিটি বেশি হয়, ইঞ্জিনে কম কার্বন বিল্ড আপ হয়, ওভারহিটিং কম হয়। হাইব্রিড গাড়ির সবচেয়ে বড় সুবিধা কম পরিবেশ দূষণ এবং ফিউল এফিসিয়েন্সি। আমাদের দেশের পপুলার হাইব্রিড কার এক্সিও, আকুয়া তে সিটিতে অনায়েসে ১৫+ এবং হাইওয়েতে ২২-২৩ এবং ৩২ মাইলেজ পাওয়ার ও নজির আছে।

হাইব্রিড ব্যাটারি সাধারণত ২ লক্ষ কিমি টেকে বলে ধরা হয়। কখনো কখনো তা ৩ লক্ষ পর্যন্ত ও টেকে, কখনো দেড় লক্ষের মাথায় প্রবলেম দেওয়া শুরু করে। হাইব্রিড ব্যাটারির যদি ২ লক্ষ কিমি ও চলে, তারপর ধীরে ধীরে ব্যাটারির সেলগুলো নষ্ট হতে শুরু করে। আপনি চাইলে আলাদা আলাদা সেল রিপ্লেস করতে পারবেন, চাইলে পুরো ব্যাটারি চেঞ্জ করতে পারবেন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমাদের দেশের মেকানিকেরা হাইব্রিড গাড়ির ভোল্টেজ মেইন্টেইন করতে পারে না সেল রিপ্লেসমেন্টের সময় দেখা যায় একটি সেল নষ্ট হলে কিছু সময়ের মধ্যেই অন্যান্য সেলগুলো ও নষ্ট হতে শুরু করে। তো সেল নষ্ট হতে শুরু করলে পুরো ব্যাটারি চেঞ্জ করাটাই বেস্ট। বাজারে চাইনিজ ও জাপানিজ দুই ধরণের ব্যাটারি পাওয়া যায়। চাইনিজ ব্যাটারি লাগাতে সোয়া লক্ষ টাকা লাগে, যেটা ২-৩ বছর খুব ভালো চলবে। আর জাপানিজ ব্যাটারি লাগাতে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা লাগে যেটা ২ লক্ষ কিমি পর্যন্ত চলবে সঠিক পরিচর্যা করলে।

অনেকেই বলেন আমাদের দেশে হাইব্রিড গাড়ি উপোযোগী নয়। কথাটা ঠিক নয়। আশির দশকে আমাদের দেশে অটোমেটিক ট্রান্সমিশন আসার পরও অনেক মানুষ বলেছিলো অটোমেটিক গিয়ার ভালো না, যা এখন কেউ বলে না। ২ লক্ষ কিমি পর এমনিতেই দেখা যায় নন হাইব্রিড গাড়িতে ও ইঞ্জিনে বড় টাকার কাজ করানো লাগতে পারে। হাইব্রিড গাড়িতে ২ লক্ষ কিমি চলতে আপনার যেই টাকার তেল বাচবে, সেই টাকা দিয়ে আপনি পুরোটা না হলেও হাইব্রিড ব্যাটারির অন্তত ৭৫% টাকা তুলতে পারবেন।আর পুরো ওয়ার্ল্ড এখন হাইব্রিড গাড়িকে পেছনে ফেলিয়ে ইলেক্ট্রিক কার ও হাইড্রোজেন ফিউল সেল কার এর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।

২০৩০ এর পর টয়োটা জানিয়েছে তারা কোনো নন হাইব্রিড গাড়ি প্রোডাকশন করবে না। আর আমাদের দেশে হাইব্রিড গাড়ির অনেক স্পেশালাইজড ওয়ার্কশপ ও গড়ে উঠেছে যেমনঃ আই ওয়ার্কস, কার ডক্টর, আরো অনেক। তাই হাইব্রিড গাড়িকে আমাদের দেশের জন্য অনুপযোগী বলা যুক্তিসংগত নয়।

Shopping Cart
Scroll to Top